তারার পথে ভ্রমণ: মহাকাশ অনুসন্ধানের গল্প
১৯৫৭ সালের নভেম্বরের এক শীতল রাতে, বিশ্ব মহাকাশের দিকে তাকিয়েছিল। একটি ছোট ধাতব ক্যাপসুল পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছিল, যার ভিতরে ছিল লাইকা—মস্কোর রাস্তা থেকে উদ্ধার করা এক ভবঘুরে কুকুর। সোভিয়েত মহাকাশযান স্পুটনিক ২-এ সে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করা প্রথম জীবিত প্রাণী হয়েছিল। তার এই আত্মত্যাগ প্রমাণ করেছিল যে মহাকাশের কঠিন পরিবেশেও জীবন টিকে থাকতে পারে।
মানব মহাকাশযাত্রার সূচনা
মাত্র চার বছর পর, ১২ এপ্রিল ১৯৬১, এক তরুণ সোভিয়েত পাইলট ইউরি গাগারিন ইতিহাস সৃষ্টি করেন। ছোট ক্যাপসুল ভস্তক ১-এ বসে তিনি প্রথম মানুষ হিসেবে মহাকাশ ভ্রমণ করেন। তিনি রকেট উৎক্ষেপণের সময় এক ঐতিহাসিক শব্দ বলেন:
গাগারিনের মহাকাশ ভ্রমণ মাত্র ১০৮ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল, তবে এটি বিশ্ব ইতিহাস বদলে দেয়।
চাঁদে পৌঁছানোর প্রতিযোগিতা
১৯৬১ সালে, প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ঘোষণা করেছিলেন:
"আমরা এই দশকে চাঁদে যাবো এবং অন্যান্য কাজ করবো, শুধু এই কারণে নয় যে এগুলো সহজ, বরং এই কারণে যে এগুলো কঠিন।"
এরপর শুরু হয় অ্যাপোলো কর্মসূচি। ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ চাঁদের পথে যাত্রা করে। নীল আর্মস্ট্রং চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রেখে বলেন:
"এটি একজন মানুষের জন্য ছোট একটি পদক্ষেপ, কিন্তু মানবজাতির জন্য এক বিশাল অগ্রগতি।"
মহাকাশ স্টেশন এবং স্পেস শাটল যুগ
চাঁদের পর মহাকাশে স্থায়ীভাবে কাজ করার দিকেই নজর দেওয়া হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭১ সালে প্রথম মহাকাশ স্টেশন স্যালিউট ১ উৎক্ষেপণ করে। পরে, মির মহাকাশ স্টেশন দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশ গবেষণার কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
এক নতুন মহাকাশ যুগ: বেসরকারি মহাকাশ সংস্থার উত্থান
২০১১ সালে নাসা স্পেস শাটল কর্মসূচি বন্ধ করার পর, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি এগিয়ে আসে। স্পেসএক্স, ব্লু অরিজিন, এবং ভার্জিন গ্যালাকটিক মহাকাশ পর্যটন এবং মঙ্গল অভিযানের মতো বড় পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে।
🚀 নাসা ও স্পেসএক্স আগামী দুই দশকের মধ্যে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।
🛰️ জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ মহাবিশ্বের উৎপত্তি নিয়ে গবেষণা করছে।
🌍 পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধানে ইউরোপা, টাইটান ও দূরবর্তী এক্সোপ্ল্যানেট অন্বেষণ চলছে।
এবং এটাই কেবল শুরু। পরবর্তী অধ্যায়? সেটি লেখা হবে তারার মাঝে। 🌠
মিশন: ইউরোপা ক্লিপার - আরও জানুন